মানব সভ্যতার সূচনা লগ্ন থেকেই সমাজ এবং রাষ্টীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে শাস্তি কার্যকর করণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে কারগারের সৃষ্টি। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ১৫৫২ সালে লন্ডনের একটি প্রাসাদকে সেন্ট ব্রিগেট ওয়েল কারাগার হিসাবে চিহ্নিত করণের মাধ্যমে আধুনিক কারা ব্যবস্থার পত্তন হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৬০-৬১ সালে বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা সদরে কারাগার নির্মান করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় অবিভক্ত বাংলায় ত্রিপুরা রাজ্যের অর্ন্তগত বর্তমান জেলা কুমিল্লার সদর উপজেলার ছোটরা মৌজায় প্রায় ৬৭ একর জায়গা নিয়ে ১৭৯২ সালে ১৫ জন কারারক্ষির মাধ্যমে কুমিল্লা জেলা কারাগারের যাত্রা শুরু হয় । পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে কুমিল্লা জেলা কারাগারকে কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে মোট জমির পরিমাণ প্রায় ৪৮.২৮৪ একর। কারাগারের পেরিমিটার ওয়ালের ভেতরে ১৪.৯০২২ একর ও বাইরে ১৮.২০৩৬ একর এবং জলাশয় এলাকা বাহির ১৫.১৭৮২ একর জমি রয়েছে। ভেতরের জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন করা হয়। যেমনঃ মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, পুঁইশাক, গাজর ও অন্যান্য ফসল উৎপাদিত হয়। পেরিমিটার ওয়ালের বাইরে জুড়ে দুইটি পুকুর ও একটি ১৫.১৭৮২ একর জলাশয় রয়েছে। চলতি বছরে পুকুরে রুই, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, মিরর কার্প, সরপুটি, তেলাপিয়া ইত্যাদি মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কর্মরত কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের খেলাধুলার জন্য একটি বড় খেলার মাঠ রয়েছে। উক্ত খেলার মাঠে বর্তমানে পুনঃ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় দুইটি ৫তলা বিশিষ্ট কারারক্ষীদের ব্যারাক নির্মাণ করা হচ্ছে।
অনুমোদিত পদ | ৫৩৭ |
বন্দি ধারণ ক্ষমতা | ১৭৪২ |
কারা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা | ৬৫ |
সর্বমোট কারা বন্দী | প্রায় ১৮৯৮ জন |
ইসলামিক ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা কর্তৃক কারাগারের অভ্যন্তরে বন্দীদের সাক্ষর জ্ঞান (গণশিক্ষা) দান এবং শিক্ষিত বন্দীদের ধর্মীয় শিক্ষাদান করার জন্য বন্দীদের মধ্য হতে ০১ জন শিক্ষক নিয়োজিত রয়েছে। কারাভ্যন্তরে ধর্মীয় শিক্ষা দানের জন্য ০১ জন ইসলাম ধর্মীয় অবৈতনিক শিক্ষক নিয়োজিত আছে। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে।
কারা শিল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ এখানে তাঁত শিল্প রয়েছে। কয়েদী কাপড় ও গামছা উৎপাদন করা হয়। তাঁত কল আছে ০৪ টি। এখানে রয়েছে মোড়া শিল্প, কয়েদী বন্দীরা বিভিন্ন প্রকার মোড়া তৈরি করে যাহা কারাগারের ব্যবস্থাপনায় বাহিরে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের নিজস্ব একটি পাজারো জীপ গাড়ী, একটি ডাবল কেবিন পিক আপ, একটি সিঙ্গেল কেবিন পিক আপ, একটি ট্রাক, ও একটি মোটর সাইকেল রয়েছে। তাছাড়া কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারকে বর্তমান অবস্থানে রেখে এর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ‘কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার পুনঃনির্মান শীর্ষক প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের ০২ টি কারারক্ষী ব্যারাক ও ০৫ টি আবাসিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
Contact Details.....
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস